৩০ দশকে অর্থাৎ ১৯৩৬ সনে চাঁদপুরের তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জনাব আজিজ আহম্মেদের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা গঠিত হয়। তিনি ক্রীড়া সংস্থার একটি মাঠের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং বাখরপুরের জমিদারদের নিকট হতে বাৎসরিক ১ টাকা র্যয়তি খাজনা ধার্য্য করে জমিদারগণ বর্তমান চাঁদপুর কলেজের মাঠটিকে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার জন্য প্রয়োজনীয় জমি দান করেন। জনাব আজিজ আহম্মেদ এর পর এ জমিকে একটি খেলার মাঠে রূপান্তর এবং এর নাম বাংলার ছোট লাট ‘এন্ডারসন’ এর নামে নামকরণ করেন। তিনি মাঠের পশ্চিম উত্তর কোনে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে তাতে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম শুরু করেন। এটিই চাঁদপুরের প্রথম প্যাভিলিয়ন ভবন। এ প্যাভিলিয়ন ভবনটির দক্ষিণ পাশে একটি উন্মুক্ত নাট্য মঞ্চও নির্মাণ করেন। এ ভবনগুলো এখনো কলেজ মাঠে স্মৃতি নিদর্শন হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে। এখানেই দীর্ঘদিন খেলাধূলা চলে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় এ মাঠটিতে বৃটিশ সেনা বাহিনীর ঘাটি নির্মাণ করা হয় এবং এখানে খেলাধূলা বন্ধ হয়ে যায়। তখন যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বর্তমান কোর্ট স্টেশনের পশ্চিম পাশে রেলওয়ে কলোনীর স্থানে একটি মাঠ নির্মাণ করে খেলাধুলা পরিচালনা করা হয়। এছাড়া নিশি কোয়ার্টারের কাছে একটি খেলার মাঠ ছিল, সেখানেও খেলাধূলা হতো। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ অবসানে আবার ‘এন্ডারসন’ মাঠে খেলাধুলা শুরু হয়। ১৯৪৬ সালে এ মাঠের উত্তর পাশে চাঁদপুর কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর এন্ডারসন গ্রাউন্ডের নাম পরিবর্তন করে আজিজ আহম্মেদ ময়দান রাখা হয়। তখনও এ আজিজ আহম্মেদ ময়দানে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার খেলাধুলা পরিচালনা করা হতো। ১৯৬০ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জনাব আজিজুল হাকিম চাঁদপুর স্টেডিয়ামের স্থানটি হুকুম দখল করেন। এবং এ স্থানটিকে একটি মাঠে রূপান্তর করা হয়। কিন্তু অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধার অভাবে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক মোঃ আমজাদ হোসেনের আমলেও আজিজ আহম্মেদ মাঠে খেলাধুলা চলতো। পরবর্তীতে মহকুমা প্রশাসক হিসেবে জনাব মোঃ আমজাদ হোসেন চাঁদপুরে যোগদান করেন এবং তিনি আজিজ আহমেদ ময়দানকে স্থায়ীভাবে মাত্র ১০ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করে চাঁদপুর কলেজকে দান করেন। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক বর্তমান স্টেডিয়াম মাঠটিকে খেলার উপযোগী করে তোলেন। এবং তখনই এ স্থানে নিয়মিত খেলাধুলা শুরু হয়। যারা মহকুমা প্রশাসক হিসেবে ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্ব পালন করেছেন তারা হচ্ছেন- ১৯৭২ সালে আইয়ুব কাদেরী,তবে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীদের নাম জানা যায়নি। তবে সাধারণ সম্পাদকদের নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা নতুনভাবে গঠন করা হয়। এরপর থেকে ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা হচ্ছেন- জনাব আলহাজ্ব জানিবুল হক (১৯৮৪-৮৫), জনাব এসএম শামছুল আলম (১৯৮৫-৮৯), জনাব মোহাম্মদ আবুল কালাম (১৯৮৯), জনাব মোঃ আবুল কাশেম (১৯৯০-৯১), জনাব মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী (১৯৯১-৯৩), জনাব মোঃ গোলাম কিবরিয়া (১৯৯৩-৯৬), জনাব মোঃ খালিদ আনোয়ার (১৯৯৬-৯৮), জনাব মোঃ রেজাউল করিম (১৯৯৮-২০০১), জনাব মোঃ মনিরুজ্জামান খান (২০০১-০২), জনাব মোঃ আব্দুল রব হাওলাদার (২০০২-০৪), জনাব মোঃ তাহেরুল ইসলাম (২০০৪-০৬), জনাব মোঃ আব্দুল খালেক (২০০৬), জনাব আ ক ম শাহীদুর রহমান , বিশ্বাস মোঃ আজিম উদ্দিন , বাবু প্রিয়তোষ সাহা । এছাড়া চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা হচ্ছেন- জনাব এম এ সালাম, জনাব এ কিউ এম লুৎফুর রহমান চুন্নু মিয়া (১৯৬১-৬৫), অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, জনাব মোঃ ফরিদ উল্যাহ (১৯৫২-১৯৬৫), জনাব শামছুদ্দিন আহমেদ বিএ (১৯৬৫-১৯৭০), ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামান ভূইয়া (ভারপ্রাপ্ত), জনাব মনির আহম্মেদ (১৯৭১-২০০১), জনাব দেওয়ান আরশাদ আলী (২০০২-০৯), জনাব গোলাম মোস্তফা বাবু (২০১০-১১)।
চাঁদপুরে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে যারা জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তারা হচ্ছেন- মরহুম এম ফরিদ উল্যাহ, মরহুম শাহ্ মোঃ সাদেক হোসেন (নান্নু মিয়া), প্রয়াত ভানু মজুমদার, জনাব কামরুজ্জামান চৌধুরী, জনাব মনির আহমেদ, বাফুফের সাবেক সভাপতি জনাব এস এ সুলতান টিটু, বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জনাব মাহবুবুর রহমান শাহীন, পুরানবাজারের কৃতী সন্তান মরহুম বাচ্চু চৌধুরী, মরহুম আবিদুর রহমান, গনেশ সাহা, ধীরেন পাল, পরেশ সাহা উল্লেখযোগ্য।
চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমোদিত ক্লাব রয়েছে ১৬টি।এই ১৬ টি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক গণ হচ্ছেন যথাক্রমে মোহমেডান স্পোটিং ক্লাবের জনাব খন্দকার মজিবুর রহমান ও মরহুম হাবিবুল্লাহ চৌধুরী, বিঞ্চুদি ক্লাব জনাব শামসুদ্দিন আহম্মেদ বিএ ও আবদুর রশিদ শেখ, নতুন বাজার ক্রিড়া চক্র জনাব মরহুম ডাঃ নুরুর রহমান ও মরহুম আবদুর রহমান, পূর্ব শ্রীরামদি ক্লাব জনাব মরহুম আবিদুর রহমান ও জনাব বিএম নুরুজ্জামান, ভাই ভাই ক্লাব স্পোটিং ক্লাব জৈষ্ঠ্য লাল মল্লিক মনু ও জনাব মিজানুর রহমান খান, পশ্চিম শ্রীরামদি ক্রিড়া চক্র জনাব বাবু সুবাস চন্দ্র রায়, নিতাই গঞ্জ ক্রিড়া চক্র জনাব ডাঃ আশুতোষ মিশ্র ও জনাব জসিম উদ্দিন খান বাবুল, গুয়াখোলা ক্রিড়া চক্র জনাব মাহবুর রহমান সাহেব, অঙ্গনা ক্লাব জনাব সফিক উল্ল্যাহ সরকার ও জনাব ওমর পাটওয়ারী, ক্রিকেট একাডেমী চাঁদপুর জনাব ডাঃ এস এম শহিদুল্লাহ্ ও জনাব শামীম ফারুকী, ইয়ুথ ক্লাব সভাপতি মরহুম এম সফিউল্ল্যাহ (সাবেক এম পি) ও জনাব মুক্তিযোদ্ধা হানিফ পাটওয়ারী, উদয়ন ক্লাব জনাব মরহুম আবূল হোসেন ঢালী ও জনাব ডিএম শাহজাহান, পাইনিয়ার ক্লাব জনাব মরহুম এডভোকেট আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদ ও জনাব এডঃ শাহ মোহাম্মদ কু্দ্দুস, আবাহনী ক্রিড়া চক্র জনাব অজয় কুমার ভৌমিক ও জনাব মরহুম মফিজুল ইসলাম। বর্তমানে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ক্রীড়া সংগঠকগণ এসব ক্লাব পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমানে এই ক্লাব গুলি পরিচালনাকারীগণ হচ্ছেন- আবাহনী ক্রীড়া চক্রঃ পরিচালনা করেছেন জনাব শাহিদুর রহমান চৌধুরী, মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবঃ পরিচালনা করছেন খন্দকার মজিবুর রহমান, বিষ্ণুদী ক্লাবঃ পরিচালনা করছেন শাহ্ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, নতুনবাজার ক্রীড়া চক্রঃ পরিচালনায় করছেন জনাব শফিকুর রহমান ভূঁইয়া ও তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী। ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবঃ পরিচালনা করছেন মোঃ আলী জিন্নাহ ও সালাউদ্দিন আহম্মেদ শান্ত। পূর্ব শ্রীরামদি ক্লাবঃ পরিচালনা করছেন জনাব নাসির উদ্দিন আহম্মেদ । পশ্চিম শ্রীরামদি ক্রীড়া চক্রঃ পরিচালনা করছেন সুভাষ চন্দ্র রায়। নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রঃ পরিচালনা করছেন জনাব জসিম উদ্দিন খান বাবুল। ভাই ভাই স্পোটিং ক্লাবঃ পরিচালনা করছেন জনাব আক্তার হোসেন খান। নাজিরপাড়া ক্রীড়া চক্রঃ পরিচালনা করছেন জনাব একেএম শফিক উল্যাহ সরকার। গুয়াখোলা ক্রীড়া চক্রঃ পরিচালনা করছেন জনাব মাহবুবুর রহমান শাহীন। পাইওনিয়্যার ক্লাবঃ পরিচালনা করছেন মুক্তার আহম্মেদ ও নাছির আহম্মেদ। চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমীঃ পরিচালনা করছেন জনাব জাহিদুল ইসলাম রোমান ও শামীম ফারুকী। অঙ্গনা এসএস ক্রীড়া সংগঠনঃ পরিচালনা করছেন জনাব ওমর পাটওয়ারী।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস